পাসপোর্ট এর পেশা কি দিব ? পাসপোর্ট পেশার আদ্যোপান্ত

পাসপোর্ট এর এপ্লিকেশনে পেশা রিলেটেড একটি পোস্ট নিয়ে আমি আপনাদের সাথে হাজির হলাম। আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরবো কোন পেশাটা আপনি নির্বাসন করলে কোন কাগজপত্র সাবমিট করতে হবে,পাসপোর্ট এর পেশা কি দিব , কোন পেশা নির্বাচন করলে কোন কাগজপত্র সাবমিট করতে হবে না এবং কোন পেশা নির্বাচন করা উচিত ইত্যাদি।

পাসপোর্ট এর আবেদনের পেশা নিয়ে যত কনফিউজ আছে সেটা আশা করি আজকে ক্লিয়ার করতে পারবো। তো পাসপোর্ট আবেদনে যদি আপনার কোন সমস্যা থাকে তাহলে এই লেখাতেই আপনার জন্য। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

পাসপোর্ট এর পেশা কি দিব ?

প্রথমেই বলে নেই আমরা যখন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করি, সর্বপ্রথম দুইটা অপশন পায় একটা পাসপোর্ট হচ্ছে অর্ডিনারি পাসপোর্ট আর পরেরটা হচ্ছে অফিসিয়াল পাসপোর্ট। অর্ডিনারি পাসপোর্ট হচ্ছে আমাদের সাধারণ জনগণের জন্য আমরা যারা কোন সরকারি দায়িত্বগত কর্মী নই বা সরকারি কোন চাকরি করি না তাদের জন্য এই পাসপোর্ট।

আর যারা সরকারি চাকরি করেন তারা অফিশিয়াল পাসপোর্ট দিতে পারেন। যারা অফিসিয়াল পাসপোর্ট করতে চান সেখানে বলা আছে NOC দিতে হবে। NOC মানে হচ্ছে যে কোন অবজেকশন সার্টিফিকেট অথবা GO দিতে পারেন। যদি আপনারা অফিসিয়াল পাসপোর্ট করতে না চান তাহলে অর্ডিনারি পাসপোর্ট এর জন্য কি কি করতে হবে?

অর্ডিনারি পাসপোর্ট এর জন্য কোন কোন পেপার সাবমিট করতে হবে এখন এগুলো জেনে নেব। তো যখন পাসপোর্ট অফিসের মূল ওয়েবসাইট ওপেন করতে যাবেন সেখানে profession যে অপশন আছে সেখানে ক্লিক করার পর দেখবেন অনেকগুলো পেশা সংযুক্ত করা আছে। যেমন অ্যাকাউন্টেন্স, আর্কিটেকচার,কৃষক,প্রাইভেট সার্ভিস, ইত্যাদি অনেকগুলো পেশা আছে সেখান থেকে আপনাকে নির্বাচন করতে হবে।

পাসপোর্ট এর পেশা

এখন আপনি যদি আমাকে প্রশ্ন করেন ভাই, আমি আমার পেশাটা কি দিবো ? আমি বলব আপনি যা করেন আপনার পাসপোর্ট এর সাথে তাই দিবেন। আপনি বর্তমানে কি করতেছেন, আপনি যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে পেশা স্টুডেন্ট সিলেক্ট করবেন। আপনি স্টুডেন্ট হয়ে কেন অন্য পেশা সিলেক্ট করতে যাবেন। যদি বলেন ভাই, স্টুডেন্ট পেশা দিয়ে যদি আমি পাসপোর্ট আবেদন করি তাহলে কি পরে কাজের ভিসা দিয়ে বিদেশ যেতে পারবো ?

অবশ্যই পারবেন। পারবেন না কেন ? আপনি আজকে স্টুডেন্ট আছেন কালকে যে স্টুডেন্ট থাকবেন এমন তো কোন কথা নেই। আপনার স্টুডেন্ট লাইফ তো আজীবন থাকবে না। যেমন- একটি উদাহরণ দিই, আমি যখন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেছিলাম আমি তখন ছাত্র ছিলাম তাই আমি পেশা হিসেবে ছাত্র দিই। তারপরে আমি পরবর্তীতে প্রাইভেট সার্ভিস দিয়ে পাসপোর্ট এর পেশা পরিবর্তন করে নিয়েছি।

পাসপোর্টে পেশা

এটা কোন কঠিন বিষয় নয়। এখন কথা হচ্ছে পাসপোর্টে যদি স্টুডেন্ট পেশার দেন তাহলে কি ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে ? কি কি কাগজপত্র সব মিট করতে হবে ? সত্যি কথা বলতে কি এটা কোন ডকুমেন্ট লাগে না। তারপরেও যখনই আমরা কোন দালাল ছাড়া নিজে নিজে পাসপোর্ট করতে যান তখন আমাদেরকে নানা হয়রানি করার জন্য আপনি স্টুডেন্ট কিনা তার একটি প্রমাণ পত্র চায়। সেক্ষেত্রে কি ডকুমেন্ট নিয়ে যাবেন ?

আপনি যে একজন ছাত্র তার মানে আপনার একটি স্কুলের আইডি কার্ড থাকবে অবশ্যই। আপনি যে স্কুলের ছাত্র সেই স্কুল আপনাকে একটি পরিচয় পত্র বা আইডি কার্ড দিয়েছে। পাসপোর্ট করার সময় সে আইডি কার্ডের একটা ফটোকপি সাথে নিয়ে যাবেন। অনেকে বলে থাকেন সার্টিফিকেট কবি দিয়ে দিবেন। তবে আমি বলব এই কাজ কখনো করবেন না। একজন ছাত্রের সাথে সার্টিফিকেটের কোন সম্পর্ক নেই।

পাসপোর্ট কি কি পেশা আছে ?

যেমন আমি ২০১৬ সালে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি তার মানে এই নয় যে আমি এখনো ছাত্র। আমার ছাত্র জীবন শেষ হয়েছে ২০১৭ সালে তারপর থেকে তো আমি আর ছাত্র নই। আমি বর্তমানে এখন চাকরি করতেছি। বর্তমানে এখন সার্টিফিকেট দিয়ে যদি বলি আমি একজন ছাত্র তাহলে সেটা কি প্রমাণ হলো ? স্টুডেন্ট হলে পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য পেশার প্রমাণপত্র হিসেবে সার্টিফিকেট না দিয়ে স্কুলের আইডি কার্ড দিয়ে দিবেন।

তারপরে এখন অনেকে আছেন যারা বলেন ভাই, প্রাইভেট সার্ভিস দিব নাকি ? যদি দিই তাহলে কি ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে ? সত্যি কথা হল, এটারও কোনো ডকুমেন্ট লাগে না। তারপরেও আপনাকে নানা ঝামেলায় যাতে পড়তে না হয় তার জন্য একটা ডকুমেন্ট নিয়ে যাবেন। কি ডকুমেন্ট নেবেন তা হল প্রত্যয়ন পত্র। আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন সে প্রতিষ্ঠানের অফিস থেকে একটি প্রত্যয়ন পত্র নিয়ে যাবেন। অনেকেই বলে NOC লাগে। হা আপনি চাইলে NOC দিতে পারেন। আপনি যেহেতু একট প্রতিষ্ঠানের কর্মরত আছেন সেহেতু NOC দিতে আপনার কোন সমস্যা থাকার কথা না।

পাসপোর্ট করার সময় পেশা

আবার অনেকেই আছে যারা প্রকৃতপক্ষে প্রাইভেট সার্ভিস চাকরি করতেছেন না কিন্তু পেশা হিসেবে দিতেছেন প্রাইভেট সার্ভিস। সেক্ষেত্রে কি দেবেন ? যদি এই ধরনের সমস্যায় পড়েন তাহলে যেকোনো একটি কম্পিউটার দোকানে গিয়ে একটা প্রত্যয়ন পত্র বানিয়ে নিতে পারেন। বড়জোর ১০০ টাকা নিবে তারা আপনাকে সুন্দর করে একটি প্রত্যয়ন পত্র বানিয়ে দেবে। আর, পাসপোর্ট অফিস থেকে তো আপনাকে ভেরিফাই করতে আসবে না যে আপনি আসলে চাকরি করেন কিনা ? দালাল ছাড়া যেহেতু আপনি নিজে নিজে পাসপোর্ট করতে গেছেন সেহেতু তারা আপনাকে হয়রানি করার জন্য এই ডকুমেন্টগুলো চেয়ে থাকে।

দেখবেন, আপনি যদি কোন দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট করতে যেতেন তাহলে তারা এই ডকুমেন্টগুলো চাইতো না। তাই বললাম, এসব ডকুমেন্টগুলো লাগেনা কিন্তু যখন একা একা পাসপোর্ট করতে যাবেন তখন সাথে করে ডকুমেন্টগুলো নিয়ে গেলে ভালো। তারপরে হলো যারা ব্যবসা করেন তারা কি করবেন ? যদি আপনি বিজনেস পেশার দেন তাহলে আপনার প্রতিষ্ঠানের নামে ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি দিলেই তারা বুঝবেন যে, হা আপনি ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন।

পাসপোর্ট পেশা কি দিলে ভালো হয় ?

এখন অনেকে আছেন যারা হচ্ছে ক্লিনার। তো পাসপোর্ট করতে গেলে ক্লিনার পেশা সিলেক্ট করলে কি কোন ডকুমেন্ট লাগবে ? আসলেই ক্লিনার তো ক্লিনার এজন্য কোন ডকুমেন্ট সাবমিট করার প্রয়োজন পড়ে না। আবার আপনি যদি একজন ডাক্তার হন তাহলে আপনাকে কি ডকুমেন্ট দিতে হবে ? আপনি যেহেতু একজন ডাক্তার তার মানে আপনার নিশ্চয়ই একটা সার্টিফিকেট আছে । আপনি ডকুমেন্ট হিসেবে শেষ সার্টিফিকেটের কত হবে জমা দিতে পারেন।

আপনি যদি একজন ড্রাইভার হন বা পাসপোর্টে যদি পেশার ড্রাইভার সিলেক্ট করেন তাহলে অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে হবে। এখন প্রশ্ন হল, আপনি যদি রিক্সা চালান তাহলে আপনার তো লাইসেন্স নেই সেক্ষেত্রে কি করবেন ? আপনার যেহেতু ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকার কথা না সেহেতু পাসপোর্ট করার সময় পেশা হিসাবে ড্রাইভিং সিলেট না করাই ভালো। অযথা ঝামেলায় গিয়ে লাভ নেই। তাই পাসপোর্টে আপনার পেশায় দিবেন একজন লেবার বা শ্রমিক। কারণ একজন শ্রমিকের তো কোন ডকুমেন্ট থাকেনা।

এখন আপনি যদি একজন কৃষক হন বা পাসপোর্ট এর পেশা হিসেবে যদি ফার্মার অপশন সিলেক্ট করেন তাহলে কি ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে ? হয়তো তারা অযথা হয়রানি করার জন্য বলবে, আপনি যদি কৃষক তাহলে জমির কাগজপত্র দেখান ? আপনি তাদের সুন্দর করে বুঝিয়ে বলবেন, আমার নিজস্ব কোন জমি নেই আমি অন্য মানুষের জমিতে চাষ করি। আর কিছু বলতে হবে না, সব কৃষকের জমি থাকবে এমন কোন কথা নেই। তাই কৃষকের জন্য কোন ডকুমেন্ট দিতে হয় না।

পাসপোর্ট পেশার ডুকুমেন্ট

এবার আসি সাংবাদিক। পাসপোর্ট এর যদি সাংবাদিকের পেশা দেন সেক্ষেত্রে আপনার ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। আপনি যেহেতু সাংবাদিক অবশ্যই আইডি কার্ড আছে তাই প্রমাণ পত্র হিসেবে জমা দিলেই তাহলে হয়ে যাবে। আপনি পাসপোর্ট পেশার অপশনে গিয়ে দেখবেন সেখানে Others একটি ক্যাটাগরি রয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে অন্যান্য অপশন সিলেক্ট করবেন কিনা। দেখেন আপনি যেহেতু অন্যান্য পেশা সিলেক্ট করলেন তার মানে আপনি কোন না কোন কাজের সাথে জড়িত। সেটার জন্য একটি ডকুমেন্ট দিতে হবে।

তবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হল, আমরা এখানে নিজের পেশার কথা বলতেছি আপনি যদি আপনার পিতা-মাতা কথা বলেন সেক্ষেত্রে আপনার পিতা-মাতা পেশা কি দিবেন ? আপনার পিতা-মাতা যদি কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে থাকেন তাহলে তাদেরও একটি ডকুমেন্ট দিতে হবে আর যদি মৃত হন তাহলে কোন ডকুমেন্ট দেয়ার প্রয়োজন নেই।

পাসপোর্ট পেশার ক্যাটাগরিতে সেলসম্যান একটি পেশা আছে সেটা নিয়ে একটু কথা বলি। অনেকে জানতে চান যে, আমি একটি দোকানে চাকরি করি, সেখানে একজন কর্মচারী হিসেবে আছি তাহলে আমি কি পেশা হিসেবে সেলসম্যান দিবো বা সেলসম্যান দিলে কি ডকুমেন্ট দিতে হবে ? দোকানের মালিক তো আমাকে কোন NOC দেবেনা। না, সেলসম্যান এ আপনার কোন ডকুমেন্ট লাগবে না বা লাগার কথা না। যদিও বা ডকুমেন্ট চায়, তবে যে কোন দোকানের কাছ থেকে মালামালে লেনদেনকৃত রশিদ বা মেমো ইত্যাদি ডকুমেন্ট বানিয়ে নিতে পারেন।

আর যারা একেবারে বেকার কোন কাজ করেন না তারা Unemployed সিলেক্ট করে দিবেন।

প্রিয় পাঠক আমরা মোটামুটি অনেকগুলো পেশার দেখলাম এবং সেই পেশাতে কি কি তথ্য দিতে হয় তার জেনে গেলাম। একদম সহজ করে বলি, যারা হচ্ছে সরকারি কর্মচারী তাদের ক্ষেত্রে Go বা Noc দিতে হবে। আপনি যেহেতু একজন সরকারি কর্মচারী তার মানে আপনার একটি ডকুমেন্ট অবশ্যই লাগবে।

পাসপোর্টে কোন পেশায় কি ডুকুমেন্ট দিবেন ?

এছাড়া যারা কূটনীতিক আছেন তাদেরকে ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে যেহেতু তারা বিশেষ পাসপোর্ট করবেন। তাদের জন্য সিষ্টেম আলাদা। আমরা যারা সাধারণ আমজনতা যারা অর্ডিনারি পাসপোর্ট করবো তাদের জন্য আসলে কোন ডকুমেন্ট লাগার কথা না। কিন্তু তারপরেও যদি চাই সেক্ষেত্রে ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়াটাই ভালো। ছাত্র হলে আইডি কার্ড নিয়ে যাবেন, আপনার পেশা যদি প্রাইভেট সার্ভিস দেন বা অন্য চাকরি করেন সে তার জন্য একটা ডকুমেন্ট নিয়ে যাবেন। সেটা আপনার অফিস থেকে অথবা যেকোনো একটি কম্পিউটার দোকান থেকে বানিয়ে নিতে হবে

আশা করি পাসপোর্ট পেশা নিয়ে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন কোন পেশায় কি ডকুমেন্ট দিবেন। অনেকেই প্রশ্ন করেন, যদি আমি পাসপোর্টে পেশা লেবার দিন তাহলে পরে অন্য ভিসায় বিদেশ যেতে পারবো কিনা। আমি তাদেরকে বলবো আপনি অবশ্যই পারবেন। আপনি যদি ছাত্রও হন তাহলে শ্রমিক ভিসা দিয়ে বিদেশ যেতে পারবেন।

আসলে পাসপোর্ট এর পেশা দিয়ে আপনার কাজ নির্ধারণ করা হবে না। ভিসা আবেদন করার সময় আপনার পেশা কি দিচ্ছেন সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি আজকে যে ছাত্র তার দুই বছর পরে যে এসা ছাত্র থাকবে এমন কোন কথা নেই। সেই পেশা পরিবর্তন হতে পারে। তো আজকে পাসপোর্ট করা যে পেশা নির্বাসন করলেন তার দুই বছর পরে তো সেটি পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে।

পাসপোর্ট এর পেশা কি দিব এটা নিয়ে চিন্তা করার কনো কারন নেই। তাই আমি বলব আপনি বর্তমানে যে পেশায় আছেন সেথায় পাসপোর্ট এর নির্বাচন করে দিন। আশা করি আর বিস্তারিত বলার প্রয়োজন নেই।

Related Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

© 2024 Widedetails - All Rights Reserved