প্রবাসী লোন সোনালী ব্যাংক। প্রবাসীদের জন্য বাংলাদেশের যতগুলো ব্যাংক লোন সহায়তা দিয়ে আসছে তাদের মধ্যে সোনালী ব্যাংক একটি। সোনালী ব্যাংক রাষ্ট্রীয় ব্যাংগুলোর মধ্যে অন্যতম। যারা টাকার অভাবে বিদেশে যেতে পারেনা তাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে সোনালী ব্যাংক। বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন কারার মানুষকে উৎসাহ প্রদান করার জন্য এ লোন দিয়ে থাকে সোনালী ব্যাংক।
স্বল্প সুদে কনো শর্ত ছাড়াই সহজে প্রবাসী কর্মসংস্থান লোন দিচ্ছে। সোনালী ব্যাংক সব ধরনের ব্যাংকিং লেনদেনের পাশাপাশি কৃষি লোন,পারসোনাল লোন,ব্যবসা লোন,হোম লোনসহ নানা লোনের সুবিধা দিয়ে থাকে। প্রিয় পাঠক,আজকে আমি সোনালী ব্যাংকের প্রবাসী কর্মসংস্থান লোন নিয়ে আলোচনা করবো।
তার আগে জেনে নিই,সোনালী ব্যাংক কি কি লোন দিয়ে থাকে?
১. এসএমই লোন
২.কৃষি লোন
৩. শিক্ষক ও সরকারী চাকুরীজীবীদের জন্য বিশেষ ক্ষুদ্র ঋণ
৪.আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঋণ
৫.শিল্প প্রকল ঋণ
৬.প্রবাসী কর্মসংস্থান লোন
৭.সোনালী ব্যাংক হোম লোন
৬.প্রবাসী কর্মসংস্থান লোন
লোনের পরিমান
শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক কাজের জন্য যারা বিদেশে যাবেন তাদের জন্য আসল বিমান ভাড়া,সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কমিশন,সার্ভিসচার্জ ও অন্যান্য চার্জসহ প্রকৃত খরচের ১০০%,তবে আপনাকে সবোর্চ্চ ৩ লক্ষ টাকা লোন দেয়া হবে।
লোনের মেয়াদ
এই লোনের মেয়াদ ৩ বছর মেয়াদি ৩ মাসের গ্রেড পিরিয়ডসহ ৩৬ মাস। তবে আপনি যে দেশে চাকরি করতে যাবেন সে দেশের চাকুরীর কন্ট্রাক্ট ফর্মে উল্লেখিত বর্ননা অনুযায়ী লোনের মেয়াদ নির্ধারন করা হবে।
লোনের সুদের হার
এই স্কিমের লোনের সুদের হার শতকরা ১২% সুদের হারে আরোপ ও আদায়যোগ্য। তবে সুদের নীতিমালা অনুযায়ী সুদের হার বাড়তে বা কমতে পারে। কনো ব্যক্তি যদি লোন খেলাপি না করে তাহলে আরোপিত সুদের হার থেকে ২% হারে কমানো যাবে। লোন বিতরনের নিয়মাবলী আসলে সব ব্যাংকের একি পদ্ধিতি অনুসরন করে।
লোনের আবেদনের কাগজপত্র
যিনি লোন নিবেন তিনি সোনালী ব্যাংক থেকে একটি ফরম নিয়ে লিখিত সাক্ষরসহ আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রের সাথে কি কি কাগজপত্র লাগবে নিচে দেওয়া হল।
ক) সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক ইস্যুকৃত আবেদনকারীর নাগরিকত্ব সনদপত্র।
খ) বিদেশে চাকুরীর নিয়োগপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি।
গ) পাসপোর্ট সাইজের ৩ (তিন) কপি সত্যায়িত ছবি।
ঘ) শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয় কর্তৃক আবেদনকারীর অনুকূলে ইস্যুকৃত বিদেশ গমনের কমিশন/সার্ভিস চার্জের বিবরণ সম্বলিত প্রতয়ন পত্র।
ঙ) ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
চ) নিয়োপত্রের সঠিকতা সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনপত্রের ফটোকপি।
ছ) পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি।
জ) মাসিক বেতন থেকে প্রেরনযোগ্য অর্থের পরিমান ও চাকুরীর মেয়াদকাল সম্পর্কে শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের গমন পত্র।
লোন আবেদনের যোগ্যতা
যারা বিদেশে কাজে যাবার জন্য চুড়ান্তভাবে নিয়োগ পেয়েছেন এবং ভিসা সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র বৈধ থাকলে বাংলাদেশের সকল নাগরিকরা এই লোন পাবে। তবে লোন দেয়ার শর্ত অনুযায়ী আবেদনকারীর ও জামিনদাতার নিজ প্রতিষ্টানের নামে সিআইবি প্রতিবেদন সংগ্রহ করে নিতে হবে। যে এজেন্সির মাধ্যমে আপনি কাজের জন্য বিদেশে যাচ্ছেন সে এজেন্সির জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে যথেস্থ সুনাম থাকতে হবে।
লোন পরিশোধ
সোনালী ব্যাংক থেকে লোন নিলে তা ৩ বছরের সময়সীমার মধ্যে পরিশোধ করতে হয়। আপনাকে বিদেশ যাওয়ার পরে তিন বছরের মধ্যে ৩৬ কিস্তিতে এই লোন পরিশোধ করতে হবে। অর্থাৎ প্রতি মাসে মাসে আপনাকে কিস্তি দিতে হবে। সোনালী ব্যাংক সরকারি পরিষেবা থাকায় এখানে অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় সুদের হার অনেকটাই কম। এই ব্যাংক সরল সুদের হার ৯ শতাংশ। অগ্রণী ব্যাংক এই সুবিধা দিয়ে থাকলেও কিন্তু তারা খুব কম সময়ে দেড় বছরের মধ্যে তাদের ঋণ পরিশোধ করতে হয়।
প্রবাসী লোন সোনালী ব্যাংক থেকে কিভাবে পেতে হয় আশা করি সঠিক ধারনা পেয়েছেন। এছাড়াও সোনালী ব্যাংকের বিভিন্ন সেবা পেতে নিকটস্থ শাখায় যোগাযোগ করুন।